সোহেল রানা, রাউজান
যুগের চাহিদায় অঘাট ঘাট হয়েছে, সুবিধা বঞ্চিত মানুষের ভাগ্য বদল হয়েছে। লাখপতি থেকে কোটিপতি। কিন্তু যুগের ঘূর্ণিয়মান চাকায় ভাগ্য বদল হয়নি কাগতিয়া জেলে পাড়ার মানুষের। অদিকাল থেকে বাপ-দাদারা গ্রামটি যেমননি ছিল এখনো থেকে গেছে সেই অবস্থায়। বসবাস করতে হচ্ছে সেঁতসেতে পরিবেশে চলাচল করতে হচ্ছে খালের উপর বাঁশের আঁটি বাঁধা সাঁকোতে। তাও মানুষের সাহার্য সহযোগিতায় দয়া দক্ষিষায়। এমন এক দুঃবিষহ পরিবেশে এখনো বসবাস রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের কাগতিয়া খালের পাড়ের জেলে পাড়ার মানুষের। এই গ্রামে বসবাস ৬০ পরিবারের। যুগে যুগে এই পাড়ার নারী পুরুষ শিশুরা অভ্যস্থ হয়ে আছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে।
ওই এলাকার জনসাধারণের সাথে কথা বলে জানা যায় রাউজানের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। অনেক মানুষের ভাগ্য বদল হয়েছে। আধুনিক এই যুগে এই জেলে পাড়ার ৬০টি পরিবারের ভাগ্য বদল হয়নি। এখনো তাদের চলাচল করতে হচ্ছে বাঁশের সাঁকোতে।
জেলে পাড়ার বাসিন্দা অজিত জলদাস ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন রাউজানের সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরী ও তার ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরী দুজনেই এসে জেলের পাড়ার মানুষের কষ্ট দেখে এখানে একটি পথ ব্রিজ করে দেয়ার ঘোষনা দিয়েছিলেন, তার এই ঘোষনা প্রতিফলন তারা দেখেননি। এই পাড়ার এক গৃহবধু টকি জলদাস বলেছেন এই সাঁকো দিয়ে পাড়াপাড় করতে গিয়ে অনেক সময় শিশুরা পা পিছলে খালে পড়ে আহত হয়। বয়ষ্করা এপাড় ওপাড় পারাপাড় করতে হয় নৌকায় চড়ে। জেলা পাড়ার মানুষের সুখে দুখে থাকা কাগতিয়া বাজারের ব্যবসায়ী নজুম খা চৌধুরী জেলে পাড়ার মানুষের দুঃখ দুদশার কথা জানিয়ে বলেছেন কাগতিয়া জেলে পাড়ার অবস্থান পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নে হলেও তাদের একমাত্র চলাচলের পথ বিনাজুরী ইউনিয়নের কাগতিয়া বাজার দিয়ে। এক সময় ওই পাড়ার মানুষ যাওয়া আসা করতো নৌকায়। তিন দশক থেকে তারা খালের উপর বাঁশের সাঁকো তৈরী করে পারাপাড়ের সুযোগ সৃষ্টি করলেও সাঁকোটি সাথে মুল রাস্তার সংযোগ ছিল না। তিন দশক আগে বিনাজুরী ইউনিয়নের প্রয়াত সাবেক চেয়ারম্যান রফিক চৌধুরী নিজের কিছু জায়গা ছাড় দিয়ে সাঁকোর সংযোগে রাস্তা করে দিয়েছিলেন। সেই রাস্তাটিও যুগে যুগে সংষ্কারের অভাবে মাটি ক্ষয় হয়ে এখন খাল পাড়ের সাথে মিশে আছে। পাড়ার লোকজন খালের জোয়ারের হাঁটু পানি মাড়িয়ে এখন বাজারের আসতে হয়। তিনি জানান প্রতিবছর বন্যায় ভেসে যায় বাঁশের সাঁকোটি। বাজারের ব্যবসায়ী রাজিব চৌধুরীসহ স্থানীয়দের সহযোগিতা দিয়ে আবার জেলে পাড়ার মানুষকে সাঁকো তৈরী করতে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায় জেলে পাড়ার সাথে রয়েছে কাগতিয়া এশাতুল উলুম কামিল মাদরাসা। জেলে পাড়ার প্রবীণ বাসিন্দা সর্দ্দার বাদল জলদাস বলেছেন বর্তমান সংকটময় অবস্থায় থাকা জেলে পাড়ার ছেলে মেয়েরা এখন আর এমন মানবেতর পরিবেশে থাকতে চাচ্ছে না। তারা চিন্তা করছে অন্যত্র গিয়ে বসতি গড়ার। এখন পাড়ার লোকজন এখন সেই চেষ্টায় আছেন।