লাইফস্টাইল ডেস্ক:
আর কয়েক দিন পরই শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস। প্রতি বছর কোটি কোটি মুসলমান সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহারে বিরত থেকে রোজা রাখেন। শুধু ধর্মীয় রীতি অনুসারেই নয়, বৈজ্ঞানিকভাবেও রোজা রাখার অনেক সুফল পাওয়া গেছে। রমজানে এক মাস রোজা রাখলে শরীরে অনেক ধরনের পরিবর্তন ঘটে। রোজার নানা উপকারিতা নিচে দেওয়া হলো:
শরীরের ঘড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে: শরীরের একটি অভ্যন্তরীণ ঘড়ি রয়েছে, যা আমাদের ঘুম-জাগরণ চক্র, হরমোন উৎপাদন এবং বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে। রোজা রাখলে শরীরের ঘড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে।
রোজায় হজমশক্তি বেড়ে যায়: দীর্ঘ সময় খাবার থেকে বিরত থাকার কারণে পরিপাকতন্ত্র বিশ্রাম পায়, লিভার থেকে এনজাইম নিঃসরণ হয়। এ ফলে শরীরের চর্বি ও কোলেস্টেরলকে ভেঙে বাইল এসিডে রুপান্তর হয়, যেটা পরিশেষে হজমশক্তি বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া যে খাবার গুলো আগে হজম হয়নি সেগুলো হজম হয়ে পাকস্থলী ও অন্ত্র পরিস্কার হয়।
ওজন কমায়: টানা এক মাস রোজা রাখা ওজন কমানোর জন্য বেশ কার্যকর। রোজা রাখলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ঝরে ও ক্যালরি পোড়ে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনার মধ্যে শ্বেত রক্তকনিকা অন্তর্ভুক্ত। রোজা রাখার মাধ্যমে নতুন শ্বেত রক্তকনিকার উৎপত্তির মাধ্যমে আরও বেশি কার্যকরী হয় এবং স্বাস্থ্যসম্মত ও বলিষ্ঠ রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করে। এ ছাড়া দীর্ঘ সময় খাবার বিরতির পর ইফতার করলে শরীরে স্টিম সেল নামের কোষ পুনরুদ্ধার হয়। এতে লাল ও শ্বেত রক্ত কনিকা ও প্লাটিলেট থাকে, যে কারণেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
রক্তচাপ কমায়: সারাদিন না খাওয়ার কারণে শরীর লবণ গ্রহণ করে না এবং ইউরিন বা মূত্রের সঙ্গে লবণ বের হয়ে যায়। এর ফলে রোজা রাখার কারণে রক্তচাপ কমে।
শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে: রোজা রাখার কারণে শরীরে হিউম্যান গ্রোথ হরমোন নামে একটি হরমোন উৎপন্ন হয়, যা শরীরের চর্বি গলাতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে: রোজা রাখার কারণে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমান হ্রাস পায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত হয় ফলে হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় ও উন্নতি সাধন হয়।
শর্করার পরিমাণ কমায়: ইনসুলিন হল এমন একটি হরমোন যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, টানা রোজা রাখলে ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা উন্নত করতে পারে । এতে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে।
মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়: রোজা রাখলে মস্তিষ্ক আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে ও প্রোটিন উৎপাদন বাড়ায়। ফলে স্মৃতিশক্তির উন্নতি ঘটে।
প্রদাহ কমায়: দীর্ঘস্থায়ী রোগ, যেমন-হৃদরোগ, ক্যান্সার এবং আলেঝইমারসহ এমন অনেক ধরনের অসুখ রয়েছে যা থেকে প্রদাহ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। নিয়মিত রোজা রাখলে প্রদাহের আশঙ্কা কমে এমন তথ্য মিলেছে বিভিন্ন গবেষণায়।
মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি: রোজা রাখলে ক্যালরি, চিনি ও লবণ কম পরিমাণে খাওয়া হয়, এতে করে মানসিক স্বাস্থ্য শক্তিশালী হয়, স্ট্রেস কমে এবং মানসিক সচ্ছতা পাওয়া যায়।