শ.ম.গফুর >>> উখিয়ার বাজার থেকে মাছ-মাংস কেনা যেনো রাজা-বাদশাহ'র রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।শিল্পপতি-জমিদার,ব্যবসায়ী ও সরকারী চাকুরে ছাড়া সহজেই মাছ কিনতে পারে না।নিম্ন ও মধ্যবিত্তের জন্য মাছ-মাংস কেনা যেনো স্বপ্নের মত।স্বল্প আয়ের মানুষের বাজারে না গেলেও দিন কাটছে অস্বস্থিতে।উপজেলার হাট বাজার সমুহে কাচা মাছের মুল্য আকাশচুম্বী।৩০০ টাকার নিচে মাছই মিলছেনা।উর্ধ্বে ২৫০০ টাকায় দাম রয়েছে এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ।লবণ কিংবা মিঠাপানির মাছ ধরলেই আগুন জ্বলে উঠে। অপরদিকে কাচা সবজি'র বাজারে রয়েছে ভোক্তাদের নাগালের ভিতর।অন্য রমযানের তুলনায় এবারের রমযানে কাচা সবজি মুল্য একেবারে নিন্মমুখি।কিন্তু কাচা মাছের বাজারে মাছের সরবরাহ তেমন কম নেই।তবে দাম সবচেয়ে বেশী।উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে জানা গেছে, ছোট চিংড়ী(লইল্যা) কেজি ৮০০ থেকে ৮৮০ টাকা কেজি।বাগদা,চিংড়ী ১০০০ থেকে আকৃতি ভেদে ১৪০০ টাকা কেজি।গলদা চিংড়ী ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি।টেংরা মাছ ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি।কোরাল মাছ ৭০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি।বাইলা মাছ ১০০০ টাকা কেজি।বাটা মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি।তেলাপিয়া ২৪০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি।সামুদ্রিক মাছের মধ্যে ইলিশ মাছ কেজিতে ৪/৫ পিস ৭০০ টাকা,৪০০ গ্রামের পিস কেজি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা।৫০০ গ্রামের পিস কেজি ১৪০০ থেকে ১৮০০ টাকা এক কেজি ওজনের ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা কেজি।পোয়া মাছ কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা।পাইস্যা ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি।সামুদ্রিক অন্যান্য ছোট-বড় মাছ কেজি ২০০ থেকে ৬০০ টাকা।বাজারে গরুর মাংস হাড়সহ কেজি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা।হাড়ছাড়া ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি।মহিষের মাংস হাড়সহ ৮০০ টাকা কেজি।হাড়ছাড়া ১০০০ টাকা কেজি।ছাগলের মাংস কেজি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা।দেশীয় মুরগী ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি।বয়লার ২০০ থেকে ২৫০-৬০ টাকা কেজি।লেয়ার ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি।সোনালী ৩৬০ থেকে ৩৯০ টাকা কেজি।তবে এসব কাচা খাদ্যদ্রব্যের দর দৈনিক তারতম্য থাকেই।শাকের আঁটিও ৩০-৫০ টাকা।সবজির বাজারে স্বস্থি মিললেও মাছের বাজারে দুর্ভোগ যেনো চিন্তার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষে মাঝে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। রবিবার বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে মাছ-মাংসের এমন চড়া দাম লক্ষ্য করা গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে কাচা মাছের সরবরাহ কম তাই দাম বাড়তি।কিন্ত কাচা সবজির বাজারে সরবরাহ প্রচুর।তাই দামও কম।বাজার ভেদে দামের কিছুটা তারতম্য থাকলেও ১৫ থেকে ৬০ টাকায় সবজি মিলছে। উখিয়া সদর দারোগা বাজারে প্রতি কেজি ঢেঁড়স ৬০ টাকা। একইভাবে বেগুন, শসা, বরবটি, করলা, ঝিঙ্গা, পটল, কচু ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।কোটবাজার, মরিচ্যা, সোনারপাড়া, কুতুপালং বাজারে প্রতি কেজি সবজি আগের তুলনায় অনেক কম। ১৫ টাকায় টমেটো,২৫ টাকায় আলু,৩০ টাকায় বেগুন,৪০ টাকায় শীম বিক্রি হচ্ছে। এ সব বাজারে শসা, বরবটি, করলা, কচুর লতির কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা। সবজির মধ্যে ক্রেতাদের হাতের নাগালে রয়েছে মিষ্টি কুমড়া। প্রতি কেজি আলু ২৫-৩০ টাকা।, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।কৈ কোরাল ৫০০-৫৫০ টাকা। রূপচাঁদা (বড়) ৯০০ টাকা, ছোট রূপচাঁদা ৮০০ টাকা, কালো চাঁদা ৬০০ টাকা, লইট্ট্যা ২০০ টাকা, কাতলা ২৫০-৩৫০ টাকা কেজিতে।উখিয়ার কুতুপালং বাজারের সবজি ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান সওদাগর বলেন, বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে,তাই অর্ধেকে নেমে এসেছে দাম।কোর্টবাজারে বাজার করতে আসা রিক্সা চালক তেলীপাড়ার শামসুল আলম বলেন, এখন সবজি খেয়েও পরিবার নিয়ে বেঁচে আছি।কিন্তু মাছ-মাংস খাওয়া মুশকিল। ৫০০ টাকার মাছ দুই বেলা খেতে পারছিনা। মরিচ্যা বাজারে সদায় করতে আসা মঞ্জুর আলম বলেন,সবজির দাম অন্যবারের রমযানের চেয়ে এবার অনেক কম।কিন্তু মাছ-মাংসের ধারে-কাছে যেতে পারছিনা বেশী দামের কারণে।থাইংখালী বাজারের নিয়মিত ক্রেতা মুফিজুল ইসলাম বলেন,সবজির দাম একেবারে কম।মাছের দাম আর মাংসের দাম নাগালের বাইরে।নিম্ন-মধ্যবিত্তদের জন্য মাছ-মাংস কেনা দু:সাধ্য।তবে উখিয়ার মাছ-মাংসের বাজারে প্রশাসনের তরফ থেকে মুল্য নির্ধারণ করে দেওয়া উচিৎ।নির্ধারিত মুল্য না থাকার কারণেই ইচ্ছেমাফিক দাম হাতিয়ে নিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাই উখিয়ার মাছ-মাংসের বাজারে উপজেলা প্রশাসনের অভিযান জরুরী হয়ে দাড়িয়েছে।উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: কামরুল হোসাইন চৌধুরী জানান,রমযানের পুর্বে এবং রমযান শুরুর থেকে প্রায় প্রতিদিন উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে।অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।একেকদিন একেকটি পণ্যের বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মনিটরিং করা হচ্ছে।পর্যায়ক্রমে জনগুরুত্বপূর্ণ বাজারে ভ্রাম্যমাণ আআদালত পরিচালনা করা হবে।