নিজস্ব প্রতিবেদক
কক্সবাজারের ঈদগাঁওতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস ১৬ ডিসেম্বর উপলক্ষে একদিন পূর্বেই বিজয় মেলার উদ্বোধন হয়েছে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের চরম দৃষ্টিকটু দিক ছিল এতে কোন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতি ছিলনা। এ নিয়ে সর্বমহলে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করেছে।
রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় ঈদগাহ আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত ২ দিন ব্যাপী বিজয় মেলা শান্তির পায়রা কবুতর ও বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন ঘোষণা করেন নবাগত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিমল চাকমা।
উদ্বোধন পরবর্তী বক্তব্যে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণ করেন এবং দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব রক্ষার কথা তুলে ধরে দুই দিন ব্যাপী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত মেলায় সকলকে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানান।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন মেলা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব জালালাবাদ চেয়ারম্যান আলমগীর তাজ জনি।তিনি বক্তব্যে মেলা এ মাসের পুরো সময় পর্যন্ত বৃদ্ধির কথা জানান।এতে আরো উপস্থিত ছিলেন ইসলামপুর চেয়ারম্যান মওলানা দেলোয়ার হোসাইন, ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মশিউর রহমান,স্বাগতিক বিদ্যালয় প্রধান খুরশিদুল জন্নাত, ঈদগাহ জানারা ইসলাম বালিকা বিদ্যালয় প্রধান গিয়াস উদ্দিন সহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ব্যাক্তিবর্গ ।
তবে বিজয় দিবসের মত জাতির এ গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন কতৃক আয়োজিত বিজয় মেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপজেলার কোন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি দেখা যায়নি।
যা উপস্থিত ও অনুপস্থিত সকল শ্রেণির মানুষের মধ্যে চরম প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। সচেতন মহলের অভিমত তবে কি নবাগত ইউএনও বিমল চাকমা পলাতক স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের মত রাজনৈতিক দল ও মতের বিরুদ্ধে তার নিজস্ব সিদ্ধান্তে উপজেলা পরিচালনা করছেন! তিনি যোগদানের পর থেকে হওয়া সরকারি সব অনুষ্ঠান ও কর্মসূচিতে উপজেলার রাজনৈতিক দল গুলোর নেতৃবৃন্দকে আমন্ত্রণ না জানালেও বারবার তিনি পলাতক আওয়ামীলীগ ও তার দোসরদের সভা ও কমিটিতে আমন্ত্রণ করে আসছেন। যা ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ ফলাও করে প্রকাশ হয়েছে। ইউএনও বিমল চাকমার অব্যাহত আওয়ামী তোষণ নীতির বিরুদ্ধে উর্ধতন কতৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেয়ায় তিনি বিজয় দিবসের মত বিজয় মেলার অনুষ্ঠান নিয়েও তার স্বৈরাচারী ঔদ্ধত্য আচরণ অব্যাহত রাখার দু:সাহস দেখিয়েছেন।
অবিলম্বে এ আওয়ামী দোসর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে জনগণ ফুঁসে উঠতে পারে বলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ আশংকা প্রকাশ করেছেন।
বিজয় মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপি আহবায়ক আবুল কালাম ও সদস্য সচিব সেলিম মাহমুদ একই সুরে বলেন, বিজয় দিবসের মত গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের বিজয় মেলা বাস্তবায়ন সম্পর্কিত প্রস্তুতি সভা,কমিটি গঠনসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিএনপির উপস্থিতি প্রয়োজন মনে করেননি।তবে বিজয় মেলা উদ্বোধনের আগের দিন রাতে একটি আমন্ত্রণ কার্ড অফিস কর্মচারীর হাতে পাঠিয়েছেন বলে শুনেছি। ইতিপূর্বেও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত বিভিন্ন সরকারি অনুষ্ঠানে তাদের আমন্ত্রণ জানানো না হলেও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিরোধিতাকারী আওয়ামীলীগ ও তাদের চিহ্নিত দোসরদের এসব অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে সামনের সারিতে স্থান দেয়ার সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যম সুত্রে জেনেছি। যেহেতু উপজেলা প্রশাসন বড় দিল হিসেবে তাদের উপস্থিতি প্রয়োজন মনে করেননা,সেহেতু মেলা সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা সঙ্গত মনে করেননি,তাই বয়কট করেছেন ।
এদিকে উপজেলা জামায়েত ইসলামীর আমীর মওলানা ছলিম উল্লাহ জিহাদী ও সেক্রেটারি মওলানা নুরুল আজিম জানান,বিজয় মেলা সম্পর্কে ইতিপূর্বে উপজেলা প্রশাসন তাদের কোন অবগত করেননি,সুতরাং মেলার বিষয়ে বিস্তারিত না জেনে অনুষ্ঠানের আগের দিন রাতের চিঠিতে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যাওয়ার প্রশ্নই উঠেনা।অনুরূপ ভাবে উপজেলার ছোট-বড় কোন দলের প্রতিনিধিকেও এতে দেখা যায়নি।ইতিপূর্বেও নবাগত ইউএনও বিমল চাকমা সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন বিরোধী পলাতক আওয়ামী স্বৈরাচার ও তার দোসরদের বারবার নিমন্ত্রণ জানালেও তিনি উপজেলা জামায়ত ও শিবিরের কোন প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানোর প্রয়োজন বোধ করেননি। তার আচরণে মনে হচ্ছে তিনি হয় পতিত আওয়ামী স্বৈরাচারের দোসর,নয়ত অদৃশ্য কোন কারণে নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন।