অনলাইন ডেস্ক: প্রতিবছর রমজান মাস এলেই আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদে চলে ইফতার তৈরির ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। বিশাল পরিসরে ইফতারের আয়োজন করা হয়। ধনী-গরিব, অভিজাত, অনভিজাত সবাই একসঙ্গে, এক সারিতে বসেই ইফতার করেন। সওয়াবের আশায় অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে ইফতার করতে আসেন। এতো মানুষের সঙ্গে একত্রে ইফতারে অংশ নিতে পারা অনেকেই ভাগ্য মনে করেন।
শোনা যায়, প্রতি রমজানে আশেপাশের মার্কেটে কেনাকাটা করতে এসে ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসায় কিছু মানুষ পরিবার-পরিজনসহ নিরাপদে ইফতার করতে চলে আসেন এখানে।
বলছিলাম চট্টগ্রাম নগরের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের কথা। জুমা মসজিদ হিসেবেই যেটি সবার কাছে বেশি পরিচিত। রমজান মাসজুড়ে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ এখানে ইফতারে অংশ নেন ও নামাজ আদায় করেন।
প্রতিদিন আসরের নামাজের পর থেকেই সারিবদ্ধভাবে রোজাদাররা সুশৃঙ্খলভাবে বসে পড়েন ইফতারের জন্য। আর মাইকে পেশ করা হয় ইসলামী মাসআলা-মাসায়েল সম্পর্কিত ওয়াজ। ইফতারের পূর্বে সমবেত হাজারও রোজাদারের সম্মিলিত মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
একসঙ্গে ইফতারে বসার ক্ষেত্রে ধনী-গরিবের কোনো বালাই নেই। এটাই হচ্ছে পুরো রমজান মাসজুড়েই এখানকার ইফতারের সময়ের চিত্র।
জানা যায়, ২০০১ সাল থেকে প্রতিবছর এখানে আয়োজন করা হচ্ছে ধনী-গরিবের বৈষম্যহীন সুবিশাল ইফতার আয়োজন। দৈনিক প্রায় ৪ হাজার রোজাদারের একসঙ্গে ইফতার আয়োজন করা হয়। নিয়মিত ইফতারসামগ্রীর মধ্যে থাকে খেজুর, শরবত, ছোলা, মুড়ি, জিলাপি, আলুর চপ, সমুচা, অন্থন, পেঁয়াজু ইত্যাদি। এছাড়া মাঝে মধ্যে থাকে মৌসুমি ফল।
আয়োজক সূত্রে জানা যায়, রোজার প্রথম দিকে ৪ হাজার মানুষ অংশ নিলেও শেষ দিকে এসে তা ৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এখানকার বিশাল কর্মযজ্ঞ সামাল দিতে নিয়োজিত থাকেন ১০ জন বাবুর্চি। আর ইফতার বণ্টন কাজে নিয়োজিত থাকেন ২০ জন কর্মচারী এবং স্বেচ্ছাসেবক।
এখানে ইফতার করতে আসা লোকজনের মধ্যে রয়েছেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, স্বল্প আয়ের মানুষ, ভিক্ষুক, চাকরিজীবী এবং বড় ব্যবসায়ীরাও। অনেক বিত্তবান সঙ্গে নিয়ে আসেন নানা ইফতারসামগ্রী। আবার অনেকে এই ইফতার আয়োজনে বড় ধরনের আর্থিক সহযোগিতা করে থাকেন বলেও জানা যায়। তবে তারা কারো কাছে তাদের পরিচয় জানাতে চান না।