আজ ৫ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দেশকে উন্নত করতে চাইলে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি’র ফর্মূলা গ্রহণ ব্যতীত সম্ভব নয়।


মুহাম্মদ আবদুর রহীম চৌধুরী

বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি’র লোগো ভালোভাবে খেয়াল করলে দেখা যাবে যে, লোগোতে বাংলাদেশকে ৭ বর্ণের ব্যক্তি উচ্চে ধরে আছে। ৭ বর্ণ বলতে বিভিন্ন ধর্ম, দল, মত, বর্ণ, শ্রেণি-পেশা ইত্যাদি বুঝাচ্ছে। তাঁরা বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণ, দল ও মতের হলেও সকলে একজোট হয়ে বাংলাদেশকে উচ্চে তুলে ধরছে তদ্রূপ বাংলাদেশ ঐক্য পার্টিও সব ধর্ম, দল ও মতের লোক নিয়ে বেশ কিছু কমন ইস্যূতে সীসা ঢালা প্রাচীরের ন্যায় ঐক্য হয়ে বাংলাদেশকে উচ্চে তুলে ধরবে।

বাংলাদেশে বিরাজিত সকল কমন সমস্যার সমাধান বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি সকল ধর্মের লোককে ঐক্যবদ্ধ করে সমাধান করবে। লোগোতে যেরকম বিভিন্ন মতের একত্রিত প্রতিক দেখানো হয়েছে তার বাস্তব রুপ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি গঠনের সময় সব ধর্ম, দল ও মতের লোক নিয়ে গঠন করা হয়েছে। পার্টির প্রথম ১১টি মিটিং ভিন্ন ভিন্ন মতের ভিন্ন ভিন্ন ১১ জনের সভাপতিত্বে করা হয়। উক্ত ১১টি মিটিং এর রেজুলেশনে উক্ত ভিন্ন ভিন্ন দলের ও মতের ১১ জনের স্বাক্ষর রয়েছে। এরকম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব ধর্ম ও দলের লোককে সম্পৃক্ত করে যদি আমরা এগিয়ে যেতে পারি তাহলে বাংলাদেশকে আসন্ন মারাত্মক সংঘাত থেকে উদ্ধার করে দেশে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে আমাদের প্রিয় এই মাতৃভূমিকে শান্তির জনপদে পরিণত করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ ঐক্য পার্টিকে আওয়ামীলীগের কাছে, বিএনপির কাছে, সনাতন ধর্মের লোকের কাছে, বৌদ্ধ ধর্মের লোকের কাছে কিংবা ইসলাম ধর্মীয় যে কোনো লোকের কাছে উপস্থাপন করা যাবে আবার প্রশাসনের লোকের কাছেও অনায়াসে ঐক্য পার্টি কর্তৃক গৃহীত রেজুলেশন এর মাধ্যমে উপস্থাপন করা যাবে।
বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি’র ১, ৫, ৭, ৯ ও ১০ নং রেজুলেশনে তা স্পষ্ট বিবৃত রয়েছে। ১ নং রেজুলেশনে কোনো পক্ষ অসন্তুষ্ট হয়ে থাকলে ৭ ও ১০ নং রেজুলেশন কাভার দিবে। ৭ ও ১০ নং এ কেউ অসন্তুষ্ট হয়ে থাকলে ১ নং রেজুলেশন কাভার দিবে।

সবদল, ধর্ম ও মতের জন্য ভারসাম্য রেখেই বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি রেজুলেশন তৈরি করে। মানুষগুলোও সেভাবে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি সংগ্রহ করছে।

বাংলাদেশ ঐক্য পার্টিকে জানতে চাইলে গুগলে “বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি” লিখে চার্চ দিলে ঐক্য পার্টি সম্পর্কিত বিভিন্ন নিউজ দেখতে পাবেন। তা মনোযোগ দিয়ে পড়লে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি সম্পর্কে আপনি পুরোপুরি ধারণা পেয়ে যাবেন।

বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি একটি সাময়িক ও নজিরবিহীন দল-যে দল অপ্রয়োজনীয় দলীয় ও রাষ্ট্রীয় খরচ করা থেকে সবসময় বিরত থাকবে। নেতা-কর্মীদেরকেও দলের পক্ষ থেকে বাড়তি ও অপ্রয়োজনীয় খরচে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

১) ঐক্য পার্টি বড় ধরনের সমস্যা না হলে নির্বাচনকালীন ব্যতীত রাস্তায় চলাচলরত কোনো একজন ব্যক্তির যাতায়াতে অসুবিধা হয়-এরকম ধরণের মিছিল কিংবা আউটডোর জনসভা করবে না-তাই দলের সদস্যরা মিছিল, জনসভা নামক ঝামেলার কর্মসূচী থেকে মুক্ত থাকবেন।

২)অন্যান্য দলের সদস্য হয়েও বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির আদর্শ, দলটির সদস্যদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যে কেউ প্রচার করতে পারবেন।

৩) এই দলের সদস্য হয়ে কেউ ওপেন হতে না চাইলেও কোন সমস্যা নাই -তবে দলের থিম ও আদর্শ এমন যে, যে কেউ চাইলে ওপেন হয়ে আওয়ামীলীগ-বিএনপিসহ যেকোনো দলের যে কাউকে দাওয়াত দিতে গেলে কোনো সমস্যা হবে না।

৪) দলটি ক্ষমতায় গেলে অতীতের সরকারগুলোর কোনো বিষয় টেনে এনে প্রতিশোধমূলক কোনো কর্মকান্ড করবে না। ১৯৯১ সাল থেকে এই পর্যন্ত ব্যাপকভাবে চলে আসা প্রতিশোধ ও পাল্টা প্রতিশোধ এর সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশকে এই পার্টি বের করে নিয়ে আসবে।

বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি যদি একবার এই নজীর স্থাপন করতে পারে – তাহলে ভবিষ্যতের সরকারগুলোও প্রতিশোধ ও পাল্টা প্রতিশোধ এর সংস্কৃতি আর দেখাবে না বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। উল্লেখ্য যে, দেশে সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি না হলে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি গঠন হতো না। সংঘাতময় পরিস্থিতি কেটে গেলে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির প্রয়োজন আর থাকবে না। পার্টির যাবতীয় কার্যক্রম তামাদি কিংবা স্থগিত করে দেওয়া হবে। শান্তিপূর্ণ স্থিতিশীল পরিবেশ না আসা পর্যন্ত বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি নির্বাচনে নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করে যাবে। ফেয়ার নির্বাচনে নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হলেই বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি নির্বাচনে যাবে এটা এজন্যই যে, বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি প্রথম ও শেষ বারের মতো কেবলমাত্র একবারই ইলেকশন গিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

৫) সরকার বদল হলে প্রশাসনে ভিন্ন মতের কর্মকর্তাদের ওএসডি করা, বদলি করা, চাকরিচ্যূত করা এ রকম কুৎসিত সংস্কৃতির চর্চা বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি পুরোপুরি বন্ধ করে দিবে। আর এতে করে প্রশাসনের লোকেরা ক্ষমতা পরিবর্তনকালীন যে অস্থিরতায় ভোগেন-সে অস্থিরতায় তাদেরকে আর ভোগতে হবে না। দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে অতীতে যারা ভুল কিংবা অপরাধ করেছেন-সবাইকে প্রথম ও শেষ বারের মতো ক্ষমা করে দিয়ে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি ক্ষমাশীলতার অনন্য নজীর স্থাপন করবে।

৬) বিচার বিভাগের জন্য স্বতন্ত্র সচিবালয় স্থাপনসহ বিচার বিভাগের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি।

৭) সামরিক বাহিনীর লোকদের অন্তর্ভুক্ত করে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে।

দল-মত-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য কাঙ্ক্ষিত পরিবেশ বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি দেশে শতভাগ নিশ্চিত করবে।

“অমুক দল এই করছে -সেই করছে-আসুন! সকলে একজোট হয়ে সেই দলকে শেষ করে দেই।”– দলগুলো একে অন্যের বিরুদ্ধে-এরকম কথা বলা ছাড়া দেশ ও দেশের বিবদমান সবাইকে রক্ষা করার মতো কোনো ‘থিম’ কিংবা আদর্শ দাঁড় করাতে পারেনি।

‘বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি’ দেশের একমাত্র পার্টি যেটি দেশ ও বিবদমান সবাইকেসহ প্রশাসনে কর্মরত সবার নিরাপত্তার জন্য কৌশল ও নীতিমালা গ্রহণ করেছে।

বিবদমান সব পক্ষই ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে শক্তিশালী। কোনো পক্ষই নিঃশেষ হবার সম্ভাবনা নাই তবে ক্ষয় হতে থাকবে, দূর্বল হতে থাকবে।
সব পক্ষের প্রত্যেক পক্ষই নিজ নিজ পক্ষকে শ্রেষ্ঠ মনে করে অচিরেই অন্য পক্ষকে পুরোপুরি ঘায়েল করে ফেলতে পারবে-এরকম অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে ভোগছে। সংঘাতে লিপ্ত হয়ে কোনো না কোনো পক্ষ অন্য পক্ষের দ্বারা ব্যাপকভাবে দূর্বল না হওয়া পর্যন্ত সেসব দলের নিরীহ সিংহভাগ সমর্থক বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির আদর্শের বিষয়ে তেমন আগ্রহ আপাতত দেখাবে না। তবে দেশবাসীর পক্ষ থেকে ব্যাপক পরিচিত কিছু লোক এগিয়ে এসে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টিতে নিবেদিতপ্রাণ নেতার ভূমিকা পালন করলে তাঁদের মাধ্যমে রাজনীতিবিমূখ কিংবা সৎ রাজনীতিবিদদের মধ্য থেকে কিছু যোগ্য মানুষ বাংলাদেশ ঐক্য পার্টিতে একটিভ হলে বিবদমান কোনো পক্ষ দূর্বল না হলেও বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি দেশের সিংহভাগ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের পাশাপাশি বিবদমান দলগুলোর নিরীহ সমর্থকসহ সৎ রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। তাঁরা দলে দলে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টিতে শামিল হবেন।
তবে এখন হোক কিংবা পরে হোক শান্তি প্রতিষ্ঠাসহ প্রিয় মাতৃভূমিকে উন্নত দেশে রূপান্তরে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি কর্তৃক গৃহীত ফর্মূলার অন্য কোনো শান্তিপূর্ণ বিকল্প নাই। শান্তি প্রতিষ্ঠা ও দেশকে উন্নত করতে চাইলে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির ফর্মূলায় সবাইকে আসতে হবে। আর তাই বাংলাদেশের সবাইকে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি’র ফর্মূলা শতভাগ গ্রহণের জন্য এগিয়ে আসার অনুরোধ জানাচ্ছি।

বিভাজিত থাকলে দেশ আগাবে না। দেশের স্বার্থে সর্বজনীন বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মহাজোট ও বিশ দলীয় জোট দেশের বাকী ৮৫% জনগণের ন্যায় বাংলাদেশ নামক মায়েরই সন্তান। সেই হিসেবে আমরা সকলে পরস্পর ভাই ভাই। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রে সবারই অবদান রয়েছে। আর তাই বিভাজিত না হয়ে, কাউকে মাইনাস না করে সবার মেধা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি প্রিয় মাতৃভূমিকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তর করতে চায়।

বিওপি’র ফর্মূলা বিওপি’র নেতৃত্ব ছাড়া অন্য কারো নেতৃত্বে বাস্তবায়ন হওয়া যাবে না-এরকম কথা আমরা বলছি না। আমাদের নেতৃত্বে কিংবা একই মানসিকতার যে কারো নেতৃত্বে বাস্তবায়ন হয়ে প্রিয় মাতৃভূমি উন্নত দেশে রূপান্তর হোক, সেটাই আমরা চাই। আর তাই বিওপি’র ফর্মূলা শতভাগ মেনে নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে হলেও প্রিয় মাতৃভূমিকে উন্নত দেশে রূপান্তরে এগিয়ে আসার জন্য দেশবাসীকে আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

লেখক: দেশীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের প্রবক্তা ও মুখপাত্র, বাংলাদেশ ঐক্য পার্টি।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর