শ.ম.গফুর >>> উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৭ অভ্যন্তরে স্থানীয় বয়োবৃদ্ধ প্রতিবন্ধী আজগর আলীর মৃত্যুর রাতেই লোকজন শুন্য বসতঘরে রোহিঙ্গা চোরের হানা।দরজার তালা ভেঙ্গেই নিয়ে গেছে স্বর্ণালংকার,নগদ টাকা,মুল্যবান মালামাল।এতে ৫ লাখ টাকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।জানা গেছে ক্যাম্প-৭ অভ্যন্তরে রয়েছে বহু স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পরিবার।উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বালুখালী উখিয়ার ঘাট তেলীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে বয়োবৃদ্ধ প্রতিবন্ধী আজগর আলীর বসতি ছিল ক্যাম্পের ভিতরে।ওখানে গত কয়েক যুগ ধরে বসবাস তার।স্ত্রী, ৬ সন্তানও এক পুত্রবধু নিয়ে ছিল সুখের সংসার।শারিরীকভাবে দুটিই পা পঙ্গু তার।চলাফেরা ছিল অন্যের কাঁধে ভর করে।কখনো হামাগুড়ি দিয়েও ।আত্মীয়স্বজন ও মানুষের দেয়া সাহায্য-সহযোগিতায় চলতো সংসার। সন্তানদের মধ্যে দুইজন অর্থের যোগান দিচ্ছিল,তাই প্রতিবন্ধী আজগর আলীর সংসারে দেখা মেলে সুখের।বড় সন্তান শাহ আলম মোটর গাড়ীর মেকানিক।নিজ এলাকায় খুলে বসেন গ্যারেজ ও টমটম-সিএনজি গাড়ীর পার্টসের দোকান। বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন শাহ আলম।আজগর আলীর স্ত্রী,৪ ছেলে ও ২ কন্যা সন্তান ও এক পুত্রবধু সহ ৯ জনের সংসার।দুই ছেলের অর্থের যোগান,আত্মীয়স্বজন ও মানুষের দেওয়া সাহায্যে প্রতিবন্ধী আজগর আলী সুখের দেখা পান।পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে চাষাবাদ, ছেলের দোকানের আয়ে সব মিলিয়ে একটি বসবাস উপযোগী ঘর করেছিলেন।ঘরে ছেলের বউ,আসবাবপত্র ছিল স্তরে-স্তরে।বয়োবৃদ্ধ আজগর আলী(৬২) ভোগছিলেন রোগ-শোকে।স্ত্রী ইসলাম খাতুন(৫৫) এখনো অসুস্থ্য।এরই মাঝে ২৬ ফেব্রুয়ারী(বুধবার)দিবাগত রাত ৯টার দিকে অসুস্থ্যবোধ করেন আজগর আলী।তাকে নিয়ে পরিবারের সবাই হাসপাতালে যাওয়ার সময় মাটির তৈরী টিনসেড ঘরে দরজা তালাবদ্ধ করে চলে যান উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে। পরিবারের সবাই সেবা যত্ন এবং সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে ব্যস্ত ছিলেন আজগর আলী’কে নিয়ে।কিন্তু রাত ১০ টারদিকে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন প্রতিবন্ধী আজগর আলী।স্ত্রী, সন্তানদের জন্য যেনো বিষাদের খবর।সবার চোখে জল আর ক্রন্দন। ক্যাম্প-৭ অভ্যন্তরে থাকা আজগর আলীর বসতঘরের চার পাশেই রোহিঙ্গাদের বস্তিঘর থাকা স্বত্বেও লোকজন শুন্য ঘরের তালা ভেঙ্গে রোহিঙ্গা চোরের দল সর্বস্থ চুরি করে নিয়ে যায়।ঘরে রক্ষিত আজগর আলীর স্ত্রী ইসলাম খাতুন ও পুত্রবধু আসমাউল হুসনা’র প্রায় ২ ভরি স্বর্ণালংকার,ছেলে শাহ আলমের গ্যারেজ দোকানের সদায়ের রক্ষিত নগদ লক্ষাধিক টাকা,বিভিন্ন প্রকারের মুল্যবান কাপড়চোপড় সহ প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যায়।বসত ঘরে ব্যবহারের কিছুই রাখেনি।ফলে নি:শ্ব মৃত আজগর আলীর পরিবার।একদিকে পরিবারের প্রধান কর্তার মৃত্যুর শোক অপরদিকে চোরের দল সর্বস্থ চুরি করে নিয়ে গেছে।সব মিলিয়ে এক অন্ধকারে পতিত প্রতিবন্ধী আজগর আলীর পরিবার। চুরি সংগঠনের খবর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি নুরুল আলম’কে অবহিত করেছেন।প্রতিবেশী মনছুর আলী,জসিম,ছাত্তার,আমিন,গিয়াস,মঞ্জুর আলম, তফুর মিয়া,ফখরুদ্দিন সহ একবাক্যেই জানান,আজগর আলী মারা গেছে।ওই রাতেই এমন চুরি কোন ইহুদী-বেদ্ধিনীর পক্ষেও কি সম্ভব?রোহিঙ্গারা শোকাহত পরিবারের সব কিছু নিয়ে গেছে।ব্যবহার করার মত সহায় সম্বল বলতে কিছুই নেই।ক্যাম্প-৭ এর ‘সিআইসি’র সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে কোন সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।এদিকে মৃত প্রতিবন্ধী আজগর আলীর বিধবা স্ত্রী ও পিতাহারা সন্তানরা সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় চুরি করে নিয়ে যাওয়া মালামাল উদ্ধার করণে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Leave a Reply